জান্নাত
নাঈম হোসেন
মুত্তাকীরা পাবে জান্নাত।
কী আছে সেথায় ?
মুমিনরা থাকবে যেথায়।
এতে রয়েছে সত্যের সিংহাসন ও মধুর নহর।
চোখ জুড়ানো নতুন শহর।
এতে রয়েছে সর্বাধিপতি শাহানশাহের সান্নিধ্যে।
ফলভর্তি শাখাগুলো থাকবে তাদের নাগালের মধ্যে।
আর কী আছে জান্নাতে ?
যার প্রতিক্ষায় মুমিন রত ইবাদতে।
এতে রয়েছে স্বচ্ছ পানির ঝর্ণা।
যা কখনও দূষিত হয়না।
এতে রয়েছে দুধের ঝর্ণা।
যার স্বাদ কখনও বিস্বাদ হয়না।
এতে রয়েছে শরাবের ঝর্ণা।
যা পানকারীদের তৃপ্তি দেয়, নেশা হয়না।
এতে রয়েছে স্বচ্ছ ও নির্মল মধুর ঝর্ণা।
এতে রয়েছে সব রকমের ফল।
যত ইচ্ছে খাবে বের হবেনা কোন মল।
আরও রয়েছে মহান রবের মাগফিরাত।
এটাই হচ্ছে মুমিনের জান্নাত।
পূণ্যবান ব্যক্তিরাই সেখানে পরম আনন্দে থাকবে।
তারা উচ্চাসনে বসে নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলী দেখবে।
তাদের চেহারায় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ভোগের ঔজ্জ্বল্য থাকবে।
তাদেরকে সিল আঁটা পানীয় পান করানো হবে।
সে পানীয় মিসকের সুঘ্রাণযুক্ত হবে।
জান্নাতে তারা উচ্চাসনে হেলান দিয়ে বসবে।
তাদের ওপর গাছের ছায়া ঝুঁকে থাকবে।
সেখানে সূর্যের প্রখর উত্তাপ থাকবে না।
শীতের তীব্রতাও দেখবে না।
পানীয়ভর্তি রুপা ও কাঁচের পেয়ালা হাতে তুলে দেওয়া হবে।
সেই কাঁচ পাত্রটিও রুপাজাতীয় হবে।
আর সেগুলো সঠিক পরিমাণে ভর্তি থাকবে।
সেখানে তাদেরকে পেয়ালাভর্তি এমন পানীয় পান করানো হবে,
যাতে আদার নির্যাস মেশানো থাকবে।
জান্নাতে সালসাবীল নামে একটি ঝর্ণা থাকবে।
একদল বালক জান্নাতীদের সেবায় নিয়োজিত হবে ।
সে বালকরা চিরদিন বালকই থাকবে।
তাদেরকে দেখে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তা বলে আঁচ হবে।
সেখানে বিশাল সাম্রাজ্য দেখতে পাবে।
তুমি যেদিকে তাকাবে,
নিয়ামত আর নিয়ামত দেখবে।
নিশ্চিত মুত্তাকীরাই মহানন্দের সে সাম্রাজ্যে বসবাস করবে।
সেখানে সালিহ বান্দাদের জন্য এমন সব নিয়ামত মওজুদ রয়েছে।
যা কোন চোখ কখনও দেখেনি,
যার কথা কোন কান কখনও শুনেনি,
যার ধারণা কোন হৃদয় কখনও উদিত হয়নি।
জান্নাতের নি’মাতগুলো অনুপম সৌন্দর্যমণ্ডিত।
জান্নাতের নি’মাতগুলো অতুলনীয় সুঘ্রাণযুক্ত।
সেখানকার খাদ্য ও পানীয় অতীব সুস্বাদু।
এতে কোন সন্দেহ নেই
এটিই সেই জান্নাত।
যার ওয়াদা মহান রব দিয়েছেন।
নিশ্চয়ই সকল মুমিন কৃতকর্মানুযায়ী সেটা পাবেন।
মহাশক্তিধর সম্রাটের নিকটে
জান্নাতে একটু ঠাঁই পাওয়া,
মানুষের বড়ো পাওয়া,
পরম পাওয়া।
এই পাওয়া রাব্বুল আলামীনের কাছেই রয়েছে।
তবে তিনি অপাত্রে তাঁর অনুগ্রহ দান করেন না।
জান্নাতে অভাব নেই।
জান্নাতে মৃত্যু নেই।
জান্নাত প্রাপ্তির পর কখনও হাতছাড়া হবে না।
তাই জান্নাত প্রাপ্তির লক্ষ্যেই আমাদের সকল চেষ্টা -সাধনা।
ফেরেশতারা যখন পবিত্র অবস্থায়
মুত্তাকীদের রূহ কবয করবে,
তখন তাদেরকে সালাম দিবে,
আর তাদেরকে বলবে,
তোমরা যে আমল করেছ এর বদলায়,
এখন বেহেশতে প্রবেশ কর।
তখন বেহশতবাসীরা বলবেঃ
সকল প্রশংসা ঐ মহান রবের জন্য ,
আমাদের জীবন আজ ধন্য।
যিনি তার ওয়াদা সত্য করে দেখালেন ।
আমাদেরকে জমিনের ওয়ারিশ বানিয়ে দিলেন ।
এখন আমরা বেহেশতে যেখানে ইচ্ছা
নিজেদের জায়গা বানিয়ে নিতে পারি।
যেখানে ইচ্ছা
স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারি।
আমলকারীদের জন্য,
এটা সবচেয়ে ভালো পুরস্কার।
কী চাই আর তাদের জন্য ?
জান্নাতে সুখ বেশুমার।
জান্নাতে তোমরা দেখতে পাবে যে,
ফেরেশতারা বেহেশতের চারপাশ ঘিরে আছে।
এবং তারা রবের প্রশংসাসহ তাঁর তাসবীহ করছে।
আর মানুষের মধ্যে ইনসাফের সাথে,
বিচার ফায়সালা করে দেওয়া হয়েছে।
তখন ঘোষণা দেওয়া হবে যে,
“আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন”।
সমাপ্ত।।
রচনাকালঃ ৪ এপ্রিল,২০২২ইং