নিজস্ব প্রতিবেদক : হিসেবে গড়মিল করে ১০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান। সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষা কমিটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় গত ৫ ডিসেম্বর দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন নোয়াখালী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এ অভিযোগের অনুলিপি লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসেবে ব্যাপক গড়মিল দেখা দিলে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি অত্র বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি সর্বসম্মতভাবে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল আয়-ব্যয় যাচাই করার জন্য তিন সদস্যের একটি হিসাব নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য গোলাম কুদ্দুছ রাসেলকে আহ্বায়ক এবং মো. আলমগীর হোসেন ও মো. ওবায়দুল হক ভূঁইয়াকে সদস্য করা হয়। গত ১১ অক্টোবর রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে লিখিতভাবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে ওই নিরীক্ষা কমিটি।
নিরীক্ষা কমিটির পর্যালোচনায় উঠে আসে- বিগত ৫ বছরে অনুমোদনহীন রশিদের মাধ্যমে মোট ১৮ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়। এছাড়াও ১০ লক্ষ ২০ হাজার ৫২৮ টাকার হিসাব প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান গোপন রাখেন।
রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য ও নিরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ রাসেল জানান, অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন, সেশন, প্রশংসাপত্র ও সনদপত্র বিতরণ এবং রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ আদায়কৃত টাকার কোনো রশিদ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া আয় পর্যালোচনায় মোট রশিদ বই ও ব্যবহৃত রশিদ বইয়ের হিসাবও ছিল না। অন্যদিকে ব্যয় পর্যালোচনায় ব্যয়ের চেয়ে অধিক পরিমাণ টাকা দেখানো ভুয়া ব্যয় রশিদ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, এ গুলো আপনাকে আমি বুঝাতে পারবো না। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমাদের সভাপতির সাথে কথা বললে বিষয়টি বুঝতে পারবেন।
অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়মের বিষয়ে জানতে রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মুজিবুর রহমানকে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।